Ads

১০ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ

বাংলাদেশ সরকার নাগরিকদের আন্তর্জাতিক ভ্রমণ সহজতর ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে ই-পাসপোর্ট চালু করেছে, যা আধুনিক প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ এবং ১০ বছরের জন্য বৈধ। ই-পাসপোর্টে রয়েছে একটি ইলেকট্রনিক চিপ যা পাসপোর্টধারীর ব্যক্তিগত তথ্য ও বায়োমেট্রিক ডেটা সংরক্ষণ করে। এ পাসপোর্টের মাধ্যমে এয়ারপোর্টে দ্রুত এবং নিরাপদে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়।

ই-পাসপোর্টের আবেদন প্রক্রিয়া সহজ এবং বিভিন্ন ধাপে বিভক্ত, যা নাগরিকদের জন্য আরও সুবিধাজনক। এই নিবন্ধে, ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাগরিকদের জন্য ই-পাসপোর্ট (ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট) চালু করেছে। ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট পাওয়ার প্রক্রিয়া ও খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য এই আর্টিকেলটি পড়ুন।

ই-পাসপোর্ট কি?

ই-পাসপোর্ট একটি বৈদ্যুতিক পাসপোর্ট যা সাধারণ পাসপোর্টের চেয়ে নিরাপদ এবং আধুনিক প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ। এটি একটি ইলেকট্রনিক চিপ বহন করে যা পাসপোর্টধারীর ব্যক্তিগত তথ্য, বায়োমেট্রিক ডেটা, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণ করে। ই-পাসপোর্ট বিশ্বব্যাপী অধিকাংশ দেশের এয়ারপোর্ট এবং বর্ডার পয়েন্টে দ্রুত এবং নিরাপদ যাত্রার সুবিধা প্রদান করে।

ই-পাসপোর্টের উপকারিতা

  • নিরাপত্তা: ই-পাসপোর্টের চিপে থাকা তথ্যগুলিকে কপি করা বা জাল করা প্রায় অসম্ভব।
  • দ্রুত প্রক্রিয়া: ই-পাসপোর্টধারী যাত্রীদের জন্য এয়ারপোর্টের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া দ্রুত হয়।
  •  বায়োমেট্রিক তথ্য: মুখমন্ডল, আঙুলের ছাপ, এবং চোখের আইরিস স্ক্যানের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
  • গ্লোবাল রিকগনিশন: ই-পাসপোর্ট অধিকাংশ দেশে স্বীকৃত এবং গ্রহণযোগ্য।

১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম

১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করতে হয়। নিচে এই ধাপগুলো বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হলো:
  • 1. অনলাইনে আবেদন
আবেদন ফর্ম পূরণ:
  • বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে (https://www.epassport.gov.bd) গিয়ে আবেদন ফর্ম পূরণ করুন।
  • আবেদন ফর্মে আপনার নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করুন।
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপলোড:
  • জাতীয় পরিচয় পত্র (NID) অথবা জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট
  • পূর্বের পাসপোর্ট (যদি থাকে)
  • প্রয়োজনীয় ফটো (সাম্প্রতিক)
  • 2. ফি পরিশোধ
অনলাইন পেমেন্ট:
  •  ই-পাসপোর্টের ফি অনলাইনে পরিশোধ করতে পারেন। মোবাইল ব্যাংকিং, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড অথবা ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে পেমেন্ট সম্পন্ন করতে পারবেন।
ফি পরিমাণ:
  • সাধারণ প্রক্রিয়া: ৩,৫০০ টাকা
  • জরুরি প্রক্রিয়া: ৫,৫০০ টাকা
  • অত্যন্ত জরুরি প্রক্রিয়া: ৭,৫০০ টাকা
  • 3. অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং
তারিখ নির্ধারণ:
  • ফি পরিশোধের পর ই-পাসপোর্টের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করতে হবে। আপনার পছন্দসই তারিখ এবং সময় নির্ধারণ করুন।
  • 4. ডকুমেন্টস যাচাইকরণ
নিয়মানুসারে যাচাইকরণ:
  • নির্ধারিত তারিখে সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আপনার ডকুমেন্টস যাচাই করান।
  • যাচাইকরণ প্রক্রিয়ায় আপনার পরিচয়, ঠিকানা এবং অন্যান্য তথ্য নিশ্চিত করা হবে।
  • 5. বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ
ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং ছবি:
  • পাসপোর্ট অফিসে আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং ছবি সংগ্রহ করা হবে।
  • আপনার চোখের আইরিস স্ক্যানও করা হতে পারে।
  • 6. ই-পাসপোর্ট ইস্যু
প্রক্রিয়ার সমাপ্তি:
  • সমস্ত তথ্য যাচাই এবং বায়োমেট্রিক সংগ্রহের পর ই-পাসপোর্ট ইস্যু করা হবে।
  • সাধারণত, সাধারণ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ২১ কার্যদিবস, জরুরি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ১০ কার্যদিবস এবং অত্যন্ত জরুরি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ৩ কার্যদিবস সময় লাগে।
  • 7. ই-পাসপোর্ট সংগ্রহ
পাসপোর্ট গ্রহণ:
  •  পাসপোর্ট প্রস্তুত হলে আপনি পাসপোর্ট অফিস থেকে এটি সংগ্রহ করতে পারবেন।
  • একটি SMS বা ই-মেইলের মাধ্যমে আপনাকে জানানো হবে যে আপনার পাসপোর্ট প্রস্তুত।

ই-পাসপোর্ট সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য

পাসপোর্ট নবায়ন
  • পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হলে পুনরায় একই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নবায়নের আবেদন করতে হবে।
  •  নবায়নের সময়ও একই ফি এবং প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত বা হারানো পাসপোর্ট
  • পাসপোর্ট হারানো বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে থানায় সাধারণ ডায়েরি (GD) করে সেই কপি পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে।
  • পাসপোর্ট পুনরুদ্ধারের জন্য নতুন আবেদন করতে হবে।
পাসপোর্টের যত্ন
  • ই-পাসপোর্টকে সরাসরি তাপ, পানি এবং ম্যাগনেটিক ফিল্ড থেকে দূরে রাখতে হবে।
  • পাসপোর্টের পৃষ্ঠায় কোনো প্রকার দাগ বা খোঁচা লাগানো যাবে না।
বৈদেশিক ভ্রমণ
  •  ই-পাসপোর্ট আন্তর্জাতিক মানের হওয়ায় অধিকাংশ দেশে বৈদেশিক ভ্রমণ সহজতর হয়।
  • ই-পাসপোর্টধারী যাত্রীরা অনেক দেশে ভিসা অন-অ্যারাইভাল সুবিধা পান।
১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ পাসপোর্ট যা বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য আন্তর্জাতিক ভ্রমণকে সহজতর এবং নিরাপদ করে তুলেছে। ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে, আপনি সহজেই এই সুবিধাটি গ্রহণ করতে পারেন। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য সহায়ক হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
কমেন্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

এ.আর.আরিফিন নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১